শুরু থেকেই তৃণমূলে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ‘প্রশাসন-এনজিও’

924
 ডেস্ক রিপোর্ট |  বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৬, ২০২০ |  ৮:১৫ অপরাহ্ণ
সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাটে খাদ্য উপহার সামগ্রী হাতে তুলে দেওয়ার পূর্বে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে।
       
এনজিও বিষয়ক ব্যুারো’র মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম।

কোভিড-১৯ মোকাবেলায় শুরু থেকেই প্রশাসন-এনজিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। একেবারে তৃণমূলে থেকে ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যগত বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি শুরু হয় মূলত স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধন করে।

সম্প্রতি বিএনএনআরসির আয়োজনে এনজিও বিষয়ক ব্যুারো’র মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম এক সাক্ষাৎকারকালে এসব কথা বলেন। রেডিও নলতা সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করে।

তিনি বলেন, আমাদের মহাসংকট করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ শুরু হবার সাথে সাথে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো একটি প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক মাননীয় মন্ত্রী পরিষদ সচিব এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সাথে পরামর্শ করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রথমে এনজিওগুলো জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য জন্য লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করা, হাত পরিষ্কার করার বিষয়ে সচেতন করেছে এবং স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে। এনজিওগুলো এখন কর্মহীন মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছে। পাশাপাশি যে সমস্ত এনজিও স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে তারা সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করছে। এভাবে এনজিওগুলো বিভিন্নমুখি কাজ করছে।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রেস ব্রিফিং এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, বিভাগীয় কমিশনার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং পুলিশ প্রশাসনসহ অন্যান্য বিভাগের সাথে সমন্বয় করে যাচ্ছেন মত বিনিময় করছেন। আমরা এনজিওদের মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ করে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সুষ্ঠু সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণের জন্য আহবান জানিয়েছি। এনজিওদের ত্রাণ বিতরণের তালিকা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেখিয়ে ত্রাণ বিতরণ করার জন্য বলা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে এর মধ্যে কোন দুর্নীতির অভিযোগ পেলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পক্ষ থেকে পুরো বিষয় মনিটিরিং করা হচ্ছে। এনজিওগুলো জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছে। আমরা নিয়মিত ডিসি এবং ইউএনওদের সাথে ফলোআপ করছি।

এনজিও বিষয়ক ব্যুরো বন্ধ চলাকালীন সময়ে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে, মহাপরিচালক এই কমিটির আহবায়ক। এই কমিটি এ পর্যন্ত অনলাইনে ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প জরুরিভাবে ছাড় দিয়েছে।

সকল এনজিওগুলো জানে যে করোনা একটি বিশ্ব সংকট এই সংকট মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এনজিওগুলো যে কোন জরুরি পরিস্থিতিতে সরকারের পাশে থেকে কাজ করেছে। আমরা আশা করবো দাতাদের সাথে পরামর্শ করে এনজিওগুলো এই বিশ্বসংকট মোকাবেলায় সরকারের সাথে পার্টনারশীপ গড়ে তুলবে। একটি সুষ্ঠু নীতিমালার মাধ্যমে এই ত্রাণগুলো বিতরণ করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী ইউনিয়নের মাদামবিবিরহাটে ইপসার পক্ষ থেকে খাদ্য উপহার সামগ্রী হাতে তুলে দেওয়ার পূর্বে দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। -হাকিম মোল্লা

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল ও ১১ এপ্রিল ২০২০ দুইদিন ব্যাপী সহস্রাধিক শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড  শ্রমিক পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছে ইপসা। সরকারী নির্দেশনা মেনে নির্দিষ্ট দুরত্ব বজায় রেখে এবং সুশৃংখলভাবে শ্রমিক পরিবারদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসেবে বিতরণ করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইপসার কর্মীরা। এছাড়া যেসব শ্রমিক কাজ করতে গিয়ে মারা গেছে কিংবা প্রতিবন্ধী হয়েছে তাদের বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আসে তারা। দরিদ্র মানুষগুলোর মাঝে যেন এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে।

সরকারের খুব কাছে থেকে সরকারকে নানা রকম তথ্য দিয়ে, কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে ইপসা তাদের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প সমন্বয়কারী মোহাম্মদ আলী শাহিন।

এইচএম/এম