গতকাল মঙ্গলবার আবার ক্লাসে ফিরেছে সে।
সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ৬নং ওয়ার্ড নলুয়াপাড়া গ্রামের আজগর আলী ও নাছিমা আক্তারের মেয়ে নাজমা আক্তার। রিকশাচালক বাবা সংসারের খরচ মেটাতে না পেরে নাজমার লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে একটি চকোলেট কারখানায় চাকরির ব্যবস্থা করেন। এ কারণে বেশ কিছুদিন স্কুলে না আসায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক কান্তি ভট্টাচার্য ও শ্রেণি শিক্ষক নাজমার খোঁজ নিলে সে অসুস্থ বলে তার বাবা আজগর আলী জানান।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ক্লাসের মডেল টেস্ট দিতে না আসায় শ্রেণি শিক্ষক মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে নাজমার চাকরির বিষয়টি জানতে পারেন। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক তার বাবার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, রিকশা চালিয়ে বেশি আয় হচ্ছে না। তার মাও অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। তবুও সংসার চলছে না। ঋণ পরিশোধ হচ্ছে না।

তাই মেয়েটিকে চাকরিতে দিয়েছেন।এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমাকে আবার স্কুলে পাঠাতে অনুরোধ করেন এবং কোনো শিশুকে স্কুলে না দিয়ে চাকরিতে পাঠানো অপরাধ বলে তাঁদের সতর্ক করেন। এ ছাড়া এ বিষয়ে অভিযোগ করলে যাঁরা চাকরি দিয়েছেন তাঁরাও শিশুশ্রম লঙ্ঘন আইনের মামলার আওতাভুক্ত হবেন। সব শুনে নিজের অপরাধ বুঝতে পারেন নাজমার রিকশাচালক বাবা। নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মেয়েকে আবারও নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার নাজমা চাকরি ছেড়ে আবারও স্কুলে ফিরে আসে।
স্কুলে ফিরে নাজাম জানায়, চকোলেট কারখানায় চাকরি করতে গিয়ে তার মাথাব্যথা সৃষ্টি হয়েছে। এখন সে কারখানার কাজ থেকে মুক্তি পেয়ে খুশি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, নাজমা লেখাপড়ায় মোটামুটি ভালো। গত কিছুদিন সে স্কুলে আসছিল না। ক্লাসের মডেল টেস্টের দিন সে অনুপস্থিত থাকায় খোঁজ নিতে গিয়ে আমরা জানতে পারি যে সে চাকরিতে যোগ দিয়েছে। আমরা হাল ছেড়ে দিইনি। শেষে তার মা-বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে এখন তার চাকরির বয়স না। তাকে শিক্ষিত করে তুললেই তার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে। তাঁরা এতে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মেয়েকে আবার স্কুলে পাঠাচ্ছেন।